বুদ্ধ পূর্ণিমা - বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে
বুদ্ধ পূর্ণিমা, এটি বৈশাখী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত যা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বারা অনুষ্ঠিত একটি প্রধান ও বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। বৈশাখ মাসের এই বিশেষ দিনে মহামানব বুদ্ধের জীবনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাতি লাভ করে।
আজকের আর্টিকেলে আমরা বুদ্ধ পূর্ণিমা ও বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। চলুন শুরু করা যাক -
আজকের আলোচনায় যা থাকছে তা এক নজরে দেখুন
- বুদ্ধ পূর্ণিমা
- বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে (২০২৫, ২০২৬ এবং ২০২৭)
- বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা
- বুদ্ধ পূর্ণিমা পুজোর নিয়ম
- গৌতম বুদ্ধের পঞ্চশীল নীতি
- Google - এ যা সার্চ করা হয়েছে
বুদ্ধ পূর্ণিমা
প্রিয় পাঠক, খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের বিশেষ এই দিনে গৌতম বুদ্ধ জন্মলাভ করেন, ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি তার সাধনার জন্য জগতে বুদ্ধ নামে খ্যাতি অর্জন করেন এবং ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। আর এভাবেই সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্য অনুসারে, পূর্বজন্মে বোধিসত্ত্ব সকল পারমি পূরণ করে সন্তোষকুমার নামে স্বর্গে অবস্থানকালে দেবগণ তাঁকে জগতের মুক্তির কল্যাণে এবং দেবতা ও মানুষের নির্বাণ পথের সন্ধান দানের জন্য মনুষ্যকুলে জন্ম নিতে অনুরোধ করেন। দেবতাদের অনুরোধের ফলে বোধিসত্ত্ব সর্বদিক বিবেচনা করে এক আষাঢ়ী পূর্ণিমায় স্বপ্নযোগে মাতৃকুক্ষিতে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় পৃথিবীর আলো দেখেন। তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যে তাঁর নিকট জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের কোনো পার্থক্য ছিল না।
আরো পড়ুন ঃ উপস্থিত বুদ্ধি বাড়ানোর ১৩টি উপায় - যে ১৩টি খাবার খেলে বুদ্ধি বাড়ে
তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রাণিরূপেই বিবেচনা করতেন এবং সব প্রাণসত্তার মধ্যেই যে কষ্টবোধ আছে তা তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করতেন। তার মতে ‘সবেব সত্তা ভবন্তু সুখীতত্তা’ অর্থাৎ জগতের সব প্রাণী সুখী হওয়ার জন্য তিনি প্রার্থনা করেছেন। সত্যকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি ২৯ বছর বয়সে সংসারের মায়া ত্যাগ করেন এবং সত্যের সন্ধানে পরিভ্রমনের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ ছয় বছর অবিরাম সাধনায় তিনি লাভ করেন সম্যক সম্বুদ্ধ বা বুদ্ধত্ব।
এখানেই শেষ নয়, বুদ্ধত্ব লাভের পর বুদ্ধদেব জীবের মুক্তি কামনায় ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র’ নামে জীবনের সর্ববিধ ক্লেশ থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে বের করেন। তিনি চতুরার্যসত্য নামে বিশ্বখ্যাত এক তত্ত্বে জীবনে দুঃখের উৎপত্তি ও দুঃখভোগের কারণ সম্পর্কে অনুসন্ধান করেন। দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর তিনি প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমণ করে তাঁর ধর্মতত্ত্ব প্রচারের কাজগুলো করে থাকেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে (২০২৫, ২০২৬ এবং ২০২৭)
এ বছর ২০২৫ সালে ১১ মে পালিত হবে বুদ্ধ পূর্ণিমা। প্রতি বছরের ন্যায় এটি পূর্ণ চাঁদ দিনে উদযাপিত হয় যা বাংলা ক্যালেন্ডারের হিসেবে প্রথম মাসে হয়ে থাকে।
আপনি যদি পূর্ববর্তী বছরের তারিখ জানতে চান তাহলে নিচের দিকে স্ক্রোল করুন।
গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনুসারীরা শুভেচ্ছা ও সংহতি বিনিময় করার জন্য তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে এই দিনটি কাটিয়ে থাকে। দিনের শুরুতে ভক্তরা প্রথমে মন্দিরে যায়, যেখানে তারা বুদ্ধের মূর্তিতে পূজা, মোমবাতি, ধূপ, ফুল এবং প্রার্থনা করে দিনটি উদযাপন করে।
➥ পূর্ববর্তী বছরগুলিতে
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা
বুদ্ধপূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বারা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম উৎসব। বৈশাখ মাসের এই বিশেষ দিনে বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে এটিকে স্মরণীয় রাখতে দিনটি ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’ নামে পরিচিতি পায়।
বুদ্ধপূর্ণিমার এই বিশেষ দিবসে তারা বুদ্ধ পূজাসহ পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্র পাঠ, সূত্র শ্রবণ এবং সমবেত প্রার্থনার পাশাপাশি সম্মিলিতভাবে নানাবিধ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও, বৌদ্ধবিহারগুলোতে বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয় যা ধর্মীয় একটি ধর্মীয় সভায় রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটিকে সরকারি সাধারণ ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বুদ্ধ পূর্ণিমা পুজোর নিয়ম
প্রথমত বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা উচিত। তারপর ঘরবাড়ি সুন্দরভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে নিতে হবে। এরপর গোসল শেষ করে সবাই নতুন পোশাক পরে, যা দিনটিকে আরো উৎসবমুখর করে তোলে। তবে অনেকেই এই বিশেষ দিনটিতে গঙ্গা স্নান করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করেন। তারপর একটি মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির সর্বত্র ঘুরিয়ে আনতে পারেন, যা বাড়িকে আরো পরিশুদ্ধ করে।
আরো পড়ুন ঃ মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় - মানসিক রোগের ৮টি কার্যকর ঔষধের নাম
অনেকে বাড়ির প্রবেশদ্বারের সামনে হলুদ, লাল সিঁদুর বা রঙ ব্যবহার করে স্বস্তিকা চিহ্ন এঁকে থাকেন। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনি বোধি গাছের কাছে দুধ ঢেলে বুদ্ধের বাণী ও শিক্ষাকে স্মরণ করতে পারেন এবং সে অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন করতে পারেন। এছাড়াও, দানকর্মেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এদিন আপনি অসহায় লোকদের খুঁজে বের করে তাদের বস্ত্র ও খাদ্য বিলি করার মাধ্যমে পূণ্যলাভ করতে পারেন।
গৌতম বুদ্ধের পঞ্চশীল নীতি
কথিত আছে, বৌদ্ধ ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নৈতিকতা হিসাবে বুদ্ধের দেওয়া পঞ্চশীল নীতি মেনে চললে জীবনের দুঃখ- দুর্দশা অনেকটা কাটিয়ে তোলা সম্ভব। যার মধ্যে রয়েছে: ✔ জীব হত্যা থেকে বিরত থাকা ✔ চুরি কারা থেকে বিরত থাকা ✔ যৌন অসদাচরণ থেকে বিরত থাকা ✔ মিথ্যা কথা না বলা এবং ✔ মদ্যপান ও অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকা।
Google - এ যা সার্চ করা হয়েছে
বুদ্ধ পূর্ণিমা, বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে, বুদ্ধ পূর্ণিমা কত তারিখ, বুদ্ধ পূর্ণিমা সরকারি ছুটি, শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা, বুদ্ধ পূর্ণিমা কি, বুদ্ধ পূর্ণিমা কেন পালন করা হয়, বুদ্ধ পূর্ণিমা ছবি, বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৫, বুদ্ধ পূর্ণিমা সম্পর্কে অনুচ্ছেদ, বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে, বুদ্ধ পূর্ণিমা 2025, বুদ্ধ পূর্ণিমা কি সরকারি ছুটি, বুদ্ধ পূর্ণিমা ট২৫, বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৫ ছুটি, বুদ্ধ পূর্ণিমা কত তারিখে, বুদ্ধ পূর্ণিমা কত তারিখ ২০২৫, বুদ্ধ পূর্ণিমা কবে 2025, বুদ্ধ পূর্ণিমার বিশেষ খাবার, বুদ্ধ পূর্ণিমা কোন মাসে পালিত হয়, অনুচ্ছেদ বুদ্ধ পূর্ণিমা, বুদ্ধ পূর্ণিমা নিয়ে কিছু কথা, buddha purnima
Please comment in accordance with the policy of the 'M.F. Hossain' website. Each comment is reviewed;
comment url