পড়া মনে থাকার গুরুত্বপূর্ণ সময় - পড়া মনে রাখার ৭টি ইসলামিক উপায়
কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে এবং পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় এই বিষয় নিয়ে আমাদের জানার আগ্রহ দীর্ঘদিনের। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের বলব কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে এবং পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় সাথে সাথে পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য সম্পর্কেও জানতে পারবেন। চলুন কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে এবং পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই আজকের এই আর্টিকেল থেকে।
আমাদের প্রত্যেকটা ব্যক্তির জন্যই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তার কারণ হলো আমাদের সকলেরই জানা উচিত কোন সময় পড়লে পড়া তাড়াতাড়ি মনে থাকে বা পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে
ভূমিকা | কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে
আজকের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে। এর পাশাপাশি পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য বা পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল, পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়, কম সময়ে বেশি পড়ার উপায়, পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়ার উপায়, পড়া মনে রাখার খাবার সহ পড়াশোনা সংক্রান্ত আরো যাবতীয় বিষয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
কাজেই, এই আর্টিকেলটি সকল শিক্ষার্থীর জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এতসব তথ্য আপনি তখনই জানবেন যখন এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাই আমি আশা করব আপনি একজন সুপ্রিয় পাঠক হিসেবে এই তথ্যবহুল আর্টিকেলটি পড়ে পড়ালেখার ব্যাপারে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করবেন। চলুন এখন মূল লেখায় ফিরে যায়।
পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য | পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল
আলোচনার শুরুতেই আমরা জানবো পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য বা পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল সম্পর্কে। আমরা সকলেই চাই আমরা যে পড়াগুলো পড়ি তা যেন সবসময় মনে থাকে। কিন্তু যেমনটা চাই কিছুক্ষণ পর তার উল্টোটাই ঘটে। অর্থাৎ যতটুকু পড়েছিলাম তার সবটুকুই ভুলে গেছি, এরকমই হয়। কাজেই, পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য বা পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল সম্পর্কে জানা থাকলে আশা করি আর এমনটা হবে না। পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য বা পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল সম্পর্কে জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন। পড়া মনে রাখার জন্য যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে সেগুলো নিম্নরূপঃ
- পড়া মনে রাখার জন্য যে কাজটি আমাদের প্রথমে করতে হবে সেটি হচ্ছে যে বিষয়টি পড়বো সেটি বারবার রিভিশন দেওয়া। অর্থাৎ একবার পড়েই রেখে দিলে সে পড়াটি আপনার মস্তিষ্কে স্থায়িত্ব লাভ করবে না। পড়া মনে রাখতে বা মস্তিষ্কের স্থায়িত্ব পেতে হলে বারবার রিভিশন দিতেই হবে। এটি পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য এর প্রথম পদক্ষেপ।
- পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল হলো ফাইনম্যান পদ্ধতি অবলম্বন করা। অর্থাৎ আপনি যে বিষয়টি পড়লেন সেটি অন্য কাউকে খুব সহজভাবে বোঝানোর পদ্ধতিকে ফাইনম্যান পদ্ধতি বলে। কোন বিষয় সম্পর্কে পড়ে যদি সেটা অন্য কাউকে শেখানো যায় তাহলে সেই পড়াটিও অনেকদিন মনে থাকার সম্ভাবনা থাকে। এটি ফাইনম্যান পদ্ধতি। পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান যখন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় পড়তেন তখন এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। আর তার নাম অনুসারে এই পদ্ধতির নাম করা হয়েছে ফাইনম্যান পদ্ধতি।
- একটি পড়া খুব তাড়াতাড়ি মনে রাখার জন্য যেটি অত্যন্ত প্রয়োজন সেটি হচ্ছে আপনার মস্তিষ্কের রিফ্রেশমেন্ট অর্থাৎ বিরতি রাখা। আর এর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির অন্তত ৬ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। কাজেই, পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য হচ্ছে আপনার মস্তিষ্কের রিফ্রেশমেন্ট বা বিরতি। এরপর পড়তে বসবেন দেখবেন সে পড়াগুলো খুব তাড়াতাড়ি মনে হচ্ছে।
- পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য হচ্ছে নিজের দেহের যত্ন নেওয়া। কথাটি শুনতে কেমন দেখালেও বিষয়টি বুঝিয়ে বলছি? আপনি যদি আপনার শরীরের যত্ন না নেন এবং সময়ের কাজ সময়ে না করেন তবে খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। আর অসুস্থ অবস্থায় লেখাপড়ায় মন বসবে না আর পড়লেও সে পড়া মাথায় থাকবে না। কারণ আপনার দেহ নামক যন্ত্রটিই তো ঠিক নেই। তাহলে কিভাবে আপনার পড়া মনে থাকবে। আশা করি বুঝেছেন।
- আবার পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল হলো অতিরিক্ত চাপকে সামাল দিতে পারা। যেমন মানুষের জীবনে নানা সময়ে বিভিন্ন রকম ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। তখন নিজেকে চাপমুক্ত রাখা এবং পড়াশোনার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। বাহ্যিক চাপ নিয়ে পড়তে বসলে সেই পড়াটি মাথায় থাকে না। কাজেই, চেষ্টা করবেন নিজেকে সবসময় চাপমুক্ত বা প্যারামুক্ত রাখার।
- পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য হচ্ছে মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা। আমাদের অনেককেই দেখা যায় পড়তে বসেছে অথচ পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মোবাইল দেখে কিংবা ফেসবুক সহ অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে অযথা সময় নষ্ট করছে। এভাবে পড়ার মাঝে মোবাইল ব্যবহার করলে সেই পড়াটি কার্যকর হবে না। কাজেই চেষ্টা করবেন পড়ার সময় মোবাইল ব্যবহার না করতে। এটি পড়া মনে রাখার একটি কৌশল।
- পড়া মনে রাখতে হলে আপনি যে পড়াটি পড়লেন সেটির একটি নোট করা। এতে পড়াটি মনে থাকবে।
এগুলোই হলো মূলত পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য বা পড়া মনে রাখার গোপন কৌশল। আশা করি এই বিষয়গুলো আপনি ফলো করলে আপনিও খুব তাড়াতাড়ি পড়া মনে করতে পারবেন।
পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়
এখন আমরা পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। আমরা কত ভাবেই না চেষ্টা করছি, কিন্তু কিছুতেই পড়া মনে থাকছে না। এখন আপনি পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় ফলো করতে পারেন। ইসলামিক উপায়ে পড়া মনে রাখতে চাইলে যে বিষয়গুলো আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো এখন আলোচনা করব। ইসলাম ধর্মে সব কিছুরই সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। আপনি ইসলামিক এই বিষয়গুলো মেনে চলুন দেখবেন আপনার খুব তাড়াতাড়ি পড়া মনে হচ্ছে। তাই দেরি না করে নিয়মগুলো জেনে নিই। পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় নিম্নরূপঃ
- প্রথমত আপনাকে ইসলামের এই বিষয়গুলো মনে প্রানে বিশ্বাস করতে হবে।
- চেষ্টা করতে হবে সব সময় আল্লাহর জিকির এবং দোয়া করার। যাতে তিনি আপনাকে পড়া মনে রাখার জন্য সামর্থ্য দান করেন।
- দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। তবেই আল্লাহ আপনাকে পড়া মনে করার সামর্থ্য দান করবেন।
- যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে নিজেকে পাপ থেকে দূরে রাখার।
- যে বিষয়টি পড়লেন সেটার উপর সবসময় রিভিশন করার চেষ্টা করা।
- যে বিষয়টা পড়বেন চেষ্টা করবেন অন্য কাউকে সে বিষয়টা শেখানোর। এতে পড়াটি আপনার ব্রেনে স্থায়িত্ব পাবে।
- চেষ্টা করতে হবে মানুষের ব্রেন বৃদ্ধি হয় এরকম খাবার খাওয়ার জন্য। যেমন: ডালিম ও বেরি জাতীয় ফল খাওয়া।
উপরোক্ত বিষয়গুলো হলো পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে
কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে এটি আজকের আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয়। আমাদের মধ্যে অনেককেই দেখা যায় সব সময় লেখাপড়া করে ঠিকই কিন্তু পরীক্ষায় কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে পারেনা। আবার এমন কাউকেও দেখা যায় যাদেরকে পড়ালেখার টেবিলে খুব একটা দেখা যায় না কিন্তু পরীক্ষায় খুব সুন্দর ফলাফল অর্জন করে। তার কারণ হলো তাদের সময় সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে বা কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে সেটা তারা জানে।
কাজেই, আপনি যদি কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে বিষয়টি না জানেন তবে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিন। কেননা আমি আজকে এই বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব আপনাদের সাথে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালবেলা কোন বিষয়ে পড়লে সেই পড়াটি তাড়াতাড়ি মনে থাকে। তার কারণ হলো রাত্রে একটি সুন্দর ঘুমের পরে মেজাজ এবং মন দুটি ভালো থাকে। এর সাথে সাথে ব্রেনের যে রিফ্রেশমেন্ট প্রয়োজন সেটিও রাতে ঘুমের মাধ্যমে হয়।
যার ফলশ্রুতিতে সকালবেলা পড়তে বসলে সেই পড়াটি ব্রেন অত্যন্ত তাড়াতাড়ি ধরতে পারে। ফলে সেই পড়াটি আপনার মস্তিষ্কে স্থায়িত্ব লাভ করে। কাজেই, আমাদের চেষ্টা করতে হবে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসা। বাচ্চাদের এই অভ্যাসটি গড়ে তুলুন। কারণ একটি বাচ্চাকে ছোট থেকে যে অভ্যাসে বড় করবেন পরবর্তীতে তার মধ্যে সেই বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পাবে। সকালবেলা পড়ার গুণই আলাদা। একমাস অভ্যাস করে দেখুন নিজেই ফলাফল বুঝতে পারবেন।
অন্যান্য সময় পড়াশোনা করলে মনে হতে যে সময় লাগবে সকাল বেলা তার চেয়ে কয়েকগুণ সময় কম লাগবে পড়া মনে করতে। সকাল বেলা পড়লে পড়াটি যে তাড়াতাড়ি মনে হয় এ বিষয়টি সাইন্টিফিক্যালি প্রমাণিত। পড়া মনে রাখার একটি উপযুক্ত সময়ই হলো খুব সকালবেলা। তাছাড়া আপনি চাইলে বিকালের পরে অর্থাৎ সন্ধ্যা থেকে রাত্রি ১০ টা বা ১১ টা পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারেন। এতেও ভালো সুফল পাওয়া যায়। এ সময়টিও পড়া মনে রাখার একটি উপযুক্ত সময়।
কিন্তু অধিক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে সকালবেলা ঘুমানো এটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন নিশ্চয়ই পড়াশোনা করার সঠিক সময় সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এতক্ষণ আপনাদের কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে এই বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করলাম আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
পড়া মনে রাখা নিয়ে এক কথায় কিছু উত্তর
কম সময়ে বেশি পড়ার উপায়ঃ কম সময়ে বেশি পড়ার উপায় হচ্ছে পড়া বুঝে এবং মনোযোগ সহকারে পড়া। বুঝে পড়লে পড়ার সময় কম লাগে এবং পরবর্তীতে মস্তিষ্কে স্থায়িত্ব লাভ করে।
সারাদিন পড়াশোনা করার উপায়ঃ আগেই বলে রাখি সারাদিন পড়াশোনা করার উপায় নেই। কারণ একজন মানুষ হিসেবে আমাদের বিরতির প্রয়োজন আছে। আপনি চাইলে সারাদিনের রুটিন করে পড়তে পারেন।
পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়ার উপায়ঃ পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়ার উপায় হচ্ছে সব সময় ভালোমতো পড়াশোনা করা। পড়াশোনায় ফাঁকি না মারা।
পড়া মনে রাখার খাবারঃ পড়া মনে রাখার খাবার বলতে বুঝানো হয়েছে ব্রেইন বৃদ্ধির খাবার। ডালিম, বেরি জাতীয় ফল, ব্রকলি, শতমূলী এবং আখরোট ইত্যাদি খাওয়া। এগুলো খেলে ব্রেন বৃদ্ধি পায়।
শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য | কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে
আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে এই বিষয় সহ পড়াশোনায় ভালো করার আরো যাবতীয় বিষয় আলোচনা করেছি। আশা করি সমস্ত বিষয়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন। আর কোন বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকলে অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যার সমাধান করার। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার একটুও উপকার হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনার পরিচিতজনদের সঙ্গে শেয়ার করুন। তাদেরকেও এ বিষয়টি জানার সুযোগ করে দিন আপনার শেয়ারের মাধ্যমে মাধ্যমে মাধ্যমে মাধ্যমে মাধ্যমে।
আর বিভিন্ন বিষয়ের আপডেট খবর সব সময় সবার আগে পেতে চাইলে আমার এই ওয়েবসাইটটি (M.F. Hossain) নিয়মিত ভিজিট করুন। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদের পাশে থাকার জন্য। তাহলে আজকে আর কথা না বাড়িয়ে আমার এই সংক্ষিপ্ত আলোচনার এখানে ইতি টানছি। কথা হবে আবার নতুন কোন টপিক নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই কামনাই করি। আর আমার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে আমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।
Please comment in accordance with the policy of the 'M.F. Hossain' website. Each comment is reviewed;
comment url