চর্ম রোগের ৭টি ঘরোয়া চিকিৎসা - চর্ম রোগ সারানোর ৫টি বিশেষ উপায়
পোস্ট সূচিপত্রঃ চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - চর্ম রোগ সারানোর উপায়
- ভূমিকা
- চর্মরোগ কি | চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
- চর্ম রোগের লক্ষণ | চর্ম রোগ সারানোর উপায়
- চর্মরোগ কিসের অভাবে হয় | চর্মরোগ কেন হয় | চর্মরোগ হয় কোন ভিটামিনের অভাবে
- চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
- চর্ম রোগ সারানোর উপায় | চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়
- চর্ম রোগের ছবি
- চর্ম রোগের ঔষধের নাম | চর্ম রোগের ক্রিম
- শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য
ভূমিকা | চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - চর্ম রোগ সারানোর উপায়
চর্মরোগ কি | চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
আমরা অনেকেই চর্মরোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিনা। আবার অনেকে আছি চর্মরোগ
সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানি। চর্মরোগ হল ত্বকের একটি সমস্যা যেখানে ত্বক
স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী দেখায়। সাধারণভাবে ত্বকের অস্বাভাবিকতায়
চর্ম রোগ নামে পরিচিত। আমাদের অনেকেরই চর্মরোগ দেখা দেয় যার ফলে দেহে ঘা, মুখে
ব্রণ, ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং ত্বকের চুলকানি সহ আরো নানারকম অস্বাভাবিকতা
সৃষ্টি হয়। এগুলোই মূলত চর্মরোগ নামে পরিচিত। চর্মরোগ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত
জানতে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
চর্ম রোগের লক্ষণ | চর্ম রোগ সারানোর উপায়
চর্মরোগ, আজকাল এই রোগকে মানুষ খুব একটা গুরুত্বের সাথে দেখে না। কিন্তু চর্ম রোগ অত্যন্ত ভয়াবহ একটি রোগ। সকল মারাত্মক রোগের লক্ষণগুলো চর্ম বা ত্বকের অস্বাভাবিকতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। বিভিন্ন প্রকারের চর্মরোগ রয়েছে। চর্মরোগ সংক্রান্ত জটিলতাও অনেক। আর চর্ম রোগের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে খাদ্যে ভেজালসহ নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
যার ফলে মানুষের সমস্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজারের বেশি চর্মরোগ আবিষ্কৃত হয়েছে। চর্মরোগ সাধারণত বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। বিভিন্ন চর্ম রোগের লক্ষণও বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে সকল চর্ম রোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তা নিচে দেওয়া হলঃ
- পুরো শরীর জুড়ে বা ত্বকের কিছু অংশে রঙের পরিবর্তন দেখা যায় (ত্বক খুব বেশি কালো বা সাদা হয়ে যায়)।
- ত্বকে পুঁজ জমা হয়ে চামড়ার রং পরিবর্তন হওয়া।
- অস্বাভাবিকতার ফলে ত্বকের চুল উঠে যায়।
- ত্বকের চুলকানি সৃষ্টি হয়।
- ত্বক ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করে।
- ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
- ত্বকের দানা বা গোটা সৃষ্টি হয়।
- ত্বকের অনুভূতি শক্তি হ্রাস পায়।
- ত্বকে বিভিন্ন দাগ সৃষ্টি হয়।
- ত্বক খসখসে বা রুক্ষ হয়ে যায়।
- ত্বকে ঘা সৃষ্টি হওয়া।
- ত্বকে লালচে ভাব দেখা দেয়।
- ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ সৃষ্টি হয়।
- ত্বকে বিভিন্ন বলি রেখা দেখা যায়।
উপরে বর্ণিত এই বিষয়গুলো হলো চর্ম রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। যা প্রায় বিভিন্ন
রকমের চর্মরোগে দেখা যায়।
চর্মরোগ কিসের অভাবে হয় | চর্মরোগ কেন হয় | চর্মরোগ হয় কোন ভিটামিনের অভাবে
চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - চর্ম রোগ সারানোর উপায় আলোচনার এই পর্বে আমরা জানব চর্মরোগ কিসের অভাবে হয়? চর্মরোগ কেন হয় এবং চর্মরোগ হয় কোন ভিটামিনের অভাবে? বিভিন্ন কারণে চর্মরোগ দেখা দেয়। আবহাওয়া ভেদে চর্ম রোগের সংক্রমণ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। শীতকালের চর্মরোগ একরকম হয় আবার গ্রীষ্মকালের চর্মরোগ আরেক রকম হয়ে থাকে। সাধারণত শীতকালে ত্বক রুক্ষ বা খসখসে হয়ে যায়।এর প্রধান কারণ হলো ভিটামিন এ এর অভাবজনিত।
আর এই রুক্ষতার জন্য বিভিন্ন রকম চর্মরোগ হয়ে থাকে।তবে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সাধারণত রোদেলা আবহাওয়ায় বেশি থাকে তাদের চর্ম রোগের সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ তারা যখন বেশিরভাগ সময় রোদ্রে থাকে তখন তাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। যার ফলে ত্বকে বিভিন্ন রকম রোগ জীবাণু তৈরি হয়। ফলে সেখান থেকে বিভিন্ন রকম চর্ম রোগের জন্ম নেয়। তাছাড়া চর্মরোগ বংশগত কারণেও হতে পারে।
আবার পরিবেশগত কারণেও হতে পারে, খাদ্যের জন্যও হতে পারে, কোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব হলেও চর্মরোগ দেখা দেয়। প্রধানত ভিটামিন সি এর অভাব হলে চর্মরোগ দেখা দেয়। তাছাড়া ভিটামিন সি এর অভাব হলে দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত ঝরে। দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় এবং খুব বেশি যদি ভিটামিন সি এর ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে স্কার্ভি নামক রোগ হয়।
আরো পড়ুনঃ টেলিটক সিমের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে হলে টক জাতীয় জিনিস খেতে হবে। বিশেষ করে লেবু , কমলালেবু , আমলকি, আনারস ইত্যাদিতে ভিটামিন সি থাকে। কাজেই, চর্ম রোগের সমস্যা থেকে বাঁচতে আপনাকে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে হবে। তো আশা করছি চর্মরোগ কিসের অভাবে হয়, চর্মরোগ কেন হয় এবং চর্মরোগ কোন ভিটামিনের অভাবে হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনারা ক্লিয়ার একটা ধারণা পেয়েছেন।
চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
চর্মরোগ এখন একটি অতি পরিচিত সমস্যা। কমবেশি সকলেরই চর্মরোগ হয়ে থাকে। তবে
ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি জানা থাকলে আপনি বাড়িতেই চিকিৎসা করতে পারবেন। চর্ম রোগের
প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে ঘরোয়া এই চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করলে আশা করা যায়
আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়া এই পদ্ধতি গুলো কি?
তাহলে এখন চর্মরোগের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে নিন।
- নিমপাতা আমরা সকলেই চিনি। এই পাতা চর্ম রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী। নিমপাতা পানিতে মিশিয়ে সেই পানি গরম করে (দেহের সহনীয় তাপমাত্রা) গোসল করলে চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- তাছাড়া আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি খালি পেটে নিমপাতার রস (কচি সবুজ নিমপাতা) খায় তাহলেও চর্মরোগ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- মূলা পাতার রসও চর্ম রোগের সমস্যায় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন কর।
- ত্বকের ফোলাভাব দূর করতে প্রতিদিন তিল এবং মূলা খেতে হবে।
- তাছাড়া প্রতিদিন আহারে মূলা খেলে তা মুখের দাগ, ফুসকুড়ি এবং ব্রণ সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
- আপেলের রসও চর্মরোগ সমস্যার সমাধান করে। চর্ম রোগে এর রস লাগালে তা উপশম হয়।
- ত্বকের তৈলাক্ত সমস্যা দূর করতে আপেল কার্যকরী। একটি আপেল ভালো করে পিষে নিয়ে এটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর হালগা গরম পানি দিয়ে ধুলে ত্বকের তৈলাক্ত সমস্যা দূর হয়।
চর্ম রোগ সারানোর উপায় | চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়
এবারে আমাদের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে চর্মরোগ সারানোর উপায় বা চর্মরোগ থেকে
মুক্তির উপায়। চর্মরোগ সমস্যা অত্যন্ত জটিল একটি সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান
করতে হলে নিচের লেখাগুলো ভালোমত পড়ুন।
দাদঃ দাগ একটি অতি পরিচিত চর্মরোগ। মূলত শরীরের কোন স্থান ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হলে তখন দাদ হয়। এই রোগটি মাথার চামড়ায়, কুঁচকিতে, হাত এবং পায়ে তাছাড়া শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত স্থান প্রচুর পরিমাণে চুলকায়। রোগটি ভালো করতে হলে আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখতে হবে। অনেক সময় তো সাবান থেকেও এ রোগটি হতে পারে। সেক্ষেত্রে কিছুদিন সাবান ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। দাদ রোগের সমস্যা সমাধানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
খোশ পাঁচড়াঃ বিশেষ করে শিশুদের একটি বেশি দেখা যায়। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত পরিষ্কার পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। মোটকথা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকায় খোস পাঁচড়া থেকে বাঁচার উপায়।
চর্ম রোগের ছবি
চর্ম রোগের ঔষধের নাম | চর্ম রোগের ক্রিম
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চর্মরোগ নিরাময় যোগ্য। তবে যে চর্মরোগ গুলো বংশগত বা জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে সেগুলো নিরাময় করা যায় না। তবে হরমোনের ভারসাম্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ইত্যাদি কারণে যদি চর্ম রোগ হয়ে থাকে তাহলে সেটা নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তো এখন আমি আপনাদেরকে জানাবো চর্ম রোগের ওষুধের নাম । চর্ম রোগের বহুল আলোচিত ওষুধের নাম হল বায়োপ্লাজেন ২০ (Bioplasgen 20)।
আরো পড়ুনঃ ইউনিক বিজনেস আইডিয়া বা টপ বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আবার চর্ম রোগের ক্রিম রোগ ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। বহুল আলোচিত চর্মরোগ
একজিমার জন্য ব্যবহার করা হয় টপিকর্ট ক্রিম (Topicort
Cream)। তাছাড়া ফাঙ্গাল ইনফেকশন এর চিকিৎসায় যে ক্রিমটি ব্যবহৃত হয় সেটি
হল লুকাজল ক্রিম (Lucazol Cream)। চর্ম রোগের আরেকটি ওষুধ
হল ফ্যাসিড এইচ সি ক্রিম (Facid HC cream)। তাছাড়া
এলার্জিক ইনফেকশনের জন্য ফ্যাসিড বিটি (Facid BT Cream)
ক্রিম ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন চর্ম রোগে আরো বিভিন্ন রকমের ক্রিম ব্যবহৃত
হয়ে থাকে। তো আশা করি চর্ম রোগের ওষুধের নাম এবং চর্ম রোগের ক্রিমের নাম গুলো
জানতে পেরেছেন।
Please comment in accordance with the policy of the 'M.F. Hossain' website. Each comment is reviewed;
comment url