চোখ উঠলে ৮টি ঘরোয়া চিকিৎসা - চোখ ওঠা রোগের ৪টি ঔষধ
চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা বা চোখ ওঠা রোগের ঔষধ নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে বিস্তারিত আলোচনা করব। সাথে সাথে চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কেও আপনারা জানতে পারবেন। একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আপনার চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা বা চোখ ওঠা রোগের ঔষধ সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। তাই চলুন চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা এবং চোখ ওঠা রোগের ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
প্রত্যেকটা ব্যক্তির জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ হলো এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি চোখ ওঠা রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং কিভাবে ভালো করা যায় সেগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা - চোখ ওঠা রোগের ঔষধ
ভূমিকা | চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা - চোখ ওঠা রোগের ঔষধ
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা এবং চোখ উঠা রোগের ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চলেছি। এর পাশাপাশি চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। চোখ ওঠা সমস্যাটি বর্তমানে প্রকোপ আকার ধারণ করেছে। চোখ উঠা যেহেতু ছোঁয়াচে রোগ। তাই একজনের থেকে আরেকজনে সহজেই বিস্তার লাভ করছে। চোখ ওঠার এই সমস্যাগুলো থেকে থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।
এ আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করবেন এই বিষয়টিও জানতে পারবেন। কাজেই, এই আর্টিকেলটি প্রত্যেকটা মানুষের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। আপনি তখনই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন যখন এ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাই আমি আশা করব আপনি একজন সুপ্রিয় পাঠক হিসেবে এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়ে চোখ ওঠার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হবেন। তাই আর কথা না বাড়িয়ে চলুন মূল আলোচনায় ফিরে যায়।
চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার
চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে এবার আমরা বিস্তারিত জানবো। বর্তমান সময়ে চোখ ওঠার সমস্যা বিপুল পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। চোখ ওঠার উপকারিতাও রয়েছে। চোখ ওঠা একটি ছোয়াচে রোগ।
এই প্যারাগ্রাফ এর মাধ্যমে আমরা চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আর দেরি না করে চলুন চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
চোখ ওঠার লক্ষণঃ চোখ ওঠার লক্ষণ মূলত চোখ দেখেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তাই চলুন চোখ ওঠার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
- চোখ ওঠার প্রথম লক্ষণ হচ্ছে চোখ দিয়ে পানি পড়া।
- চোখে চুলকানি সৃষ্টি হওয়া।
- একটি চোখ অথবা উভয়টি লাল হয়ে যায়।
- চোখে পেস্টি হতে দেখা যায়।
- একটি চোখ অথবা উভয়টি ফুলে যায়।
- চোখে অস্বস্তিভাব সৃষ্টি হয় অর্থাৎ চোখ খচখচ করে।
- চোখে দেখতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
- চোখ ওঠার আরেকটি লক্ষণ হল চোখ আলো সহ্য করতে পারে না।
- আক্রান্ত চোখে বেশি জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হওয়া।
- চোখ দিয়ে ঝাপসা দেখা বিশেষ করে আক্রান্ত চোখে ভালোমতো দেখতেই না পাওয়া।
- চোখের তীক্ষ্ণতা ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়া।
এগুলোই হলো মূলত চোখ ওঠার লক্ষণ। এই লক্ষণগুলো কারো মধ্যে প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে আপনার চোখ ওঠার সমস্যা হতে পারে। কাজেই, লক্ষণগুলো দেখলে আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করুন।
চোখ ওঠার প্রতিকারঃ চোখ ওঠার প্রতিকার সম্পর্কে এখন আমাদের জানা প্রয়োজন। চোখ ওঠার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা যে ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারি সেগুলোই হল চোখ ওঠার প্রতিকার। তাই চলুন চোখ ওটার প্রতিকার সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে নিই।
- চোখ ওঠার প্রথম প্রতিকার হল বেশ কয়েকবার পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করা। চোখ পরিষ্কার করার পরে হাত ভালোভাবে পরিষ্কারক দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- চোখ যেহেতু একটি সেনসিটিভ জিনিস তাই কোন অবস্থাতেই চোখে ঘষাঘষি করা যাবে না।
- নিজের ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিশেষ করে মুখ মোছার তোয়ালে বা গামছা এবং ব্যবহার্য চশমা ভালোমতো পরিষ্কারক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- আক্রান্ত চোখে এক্সট্রা কোন জিনিস ব্যবহার করা ঠিক না। এতে করে আরো ইনফেকশন ছড়াতে পারে।
- সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চোখে কালো চশমা বা সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত।
- চোখ আক্রান্ত থাকা অবস্থায় চোখে কোন প্রকার লেন্স ব্যবহার করা ঠিক না।
- পূর্ণাঙ্গ সুস্থতার জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
এগুলোই হল মূলত চোখ ওঠার প্রতিকার। এই নিয়মকানুন গুলো মেনে চললে আপনি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।
চোখ ওঠা রোগের ঔষধ | চোখ উঠলে কোন ড্রপ
চোখ ওঠা রোগের ঔষধ বা চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করা হয় এটি নিয়ে এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। চোখ ওঠা বর্তমান সময়ে প্রায় সকলেরই দেখা যাচ্ছে। এটি মূলত ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের জন্য হতে পারে। চোখ ওঠা একটি ছোয়াচে রোগ। বাচ্চাদের চোখ উঠার ড্রপ হলো ক্লোরামফেনিকল ড্রপ। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সিপ্রোফ্লক্সাসিন ড্রপ ব্যবহার করা হয়। যদি সমস্যা আরো গুরুতর হয় তাহলে সিপ্রোফ্লক্সাসিন ড্রপের পাশাপাশি ডেক্সামেন্থাসন যুক্ত ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
তাছাড়া চোখ চুলকানোর জন্য আপনি অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করতে পারেন। এই ছিল মূলত চোখের ব্যবহৃত ড্রপ। তাছাড়া আমার পরামর্শ থাকবে চোখ যেহেতু মানুষের একটি স্পর্শকাতর অঙ্গ। তাই অবশ্যই চোখের কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন। আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য চোখে ব্যবহৃত ড্রপগুলো নিচে লিস্ট আকারে উল্লেখ করলাম। চোখ ওঠা রোগের ঔষধ বা ড্রপগুলো নিম্নরূপঃ
- ক্লোরামফেনিকল ড্রপ (Chloramphenicol drops)
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন ড্রপ (Ciprofloxacin drops)
- ডেক্সামেন্থাসন (Dexamethasone) যুক্ত ড্রপ (চোখের অবস্থা গুরুতর হলে)
- অ্যান্টিহিস্টামিন (Antihistamine) যুক্ত ড্রপ (চোখে চুলকানির জন্য)
চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা
চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে এবার আমাদের জানা প্রয়োজন। চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসায় এটি আজকের আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয়। আপনার যদি ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি জানা থাকে তাহলে চোখ ওঠা রোগ খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।
তাই চলুন চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। চোখ ওঠা সারানোর জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো নিম্নরূপঃ
- প্রথমে একটি পরিষ্কার কাপড় বা তোয়ালে নিন এবং তাতে ছ্যাক দিন। তারপর সেটি চোখের আক্রান্ত স্থানে ধরুন। উল্লেখ্য, তাপমাত্রা যেন চোখের সহনীয় হয়। এভাবে বেশ কয়েকবার চোখে একদিন। এতে করে আক্রান্ত স্থানের ব্যাকটেরিয়া মরে যাবে এবং আপনি স্বস্তি বোধ করবেন।
- চোখ ওঠা সমস্যা দূর করতে পেয়ারার পাতা খুবই কার্যকরী। বেশ কিছু পেয়ারার পাতা গরম করায়ে নেড়ে নিন এবং সেটি পরিষ্কার কাপড়ে নিয়ে চোখের আক্রান্ত স্থানে রাখতে হবে। দিনে বেশ কয়েকবার এ কাজটি করুন। দেখবেন আপনি অনেক আরামবোধ করছেন।
- চোখের সমস্যা যদি ব্যাকটেরিয়া জনিত হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে আপনি ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এটি চোখ ওঠার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ক্যাস্টর অয়েলে ব্যাকটেরিয়া নাশক সেই উপাদানটি রয়েছে যা আপনার চোখকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেবে।
- চোখের পাতা বা পাপড়ি পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে নরম পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতে হবে এবং দুই চোখের জন্য আলাদা কাপড় ব্যবহার করা জরুরী। খেয়াল রাখতে হবে চোখ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে সেই কাপড়টি যেন অবশ্যই গরম পানিতে পরিষ্কার করা থাকে।
- গরম পানি দিয়ে ছ্যাক দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে ঠান্ডা বরফ দিয়ে আক্রান্ত স্থানে ছ্যাক দিতে হবে।
- চোখে যাতে কোন প্রেসার না পড়ে সেই দিকে খুব ভালোভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে।
- চোখ আক্রান্ত থাকা অবস্থায় বেশ সময় ধরে মোবাইল কিংবা কম্পিউটার কিংবা এ ধরনের কোন কাজ করা উচিত না। এতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
- সর্বশেষ চোখ উঠলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
উপরে বর্ণিত এই বিষয়গুলো মেনে চললে আপনি ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ইনশাল্লাহ ভালো হয়ে যাবেন। এগুলোই হল চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য | চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা - চোখ ওঠা রোগের ঔষধ
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা এবং চোখ ওঠা রোগের ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি অত্যন্ত সহজ এবং সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি এবং আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি চোখ উঠা বিষয়ে সকল কিছু বুঝতে পেরেছেন। আর কোন বিষয় যদি আপনার বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আপনি ব্যক্তিগতভাবে অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
আমি যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার বিন্দুমাত্র উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। তাদেরকেও চোখ উঠা বিষয়ে সতর্ক করে দিন আপনার একটি শেয়ার করার মাধ্যমে। আর বিভিন্ন আপডেট খবর সবসময় সবার আগে পেতে চাইলে এই ওয়েবসাইটটির (M.F. Hossain) সাথেই থাকুন এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাকে সাপোর্ট প্রদান করুন। আমি যেন উৎসাহিত হয়ে আরো নতুন কোন বিষয়ে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।
আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি সঠিক বিষয়টি আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য এবং আপনাদের পাশে থাকার জন্য। তাহলে আজকে আর কথা না বাড়িয়ে আমার এই সংক্ষিপ্ত আলোচনার এখানেই ইতি টানছি। সকলেই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন এই কামনাই করি। পাশাপাশি আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে আমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। কথা হবে আবার নতুন কোন টপিক নিয়ে। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।
Please comment in accordance with the policy of the 'M.F. Hossain' website. Each comment is reviewed;
comment url